শিলিগুড়ি: মাদুরাই (তামিলনাড়ু) এর মীনাক্ষী মিশন হাসপাতাল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত শিলিগুড়ি`র হিল কার্ট রোডে টেলাডোক টেলিমেডিসিন কনসাল্টেশন ক্লিনিকের উদ্বোধন করলেন ডাঃ পিডি ভুটিয়া, ‘বঙ্গরত্ন’ এবং ‘বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান’ প্রাপক।
ক্লিনিকটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত টেলিমেডিসিন প্ল্যাটফর্ম হিসাবে বিবেচিত টেলাডোক দিয়ে সজ্জিত, যা বর্তমানে বিশ্বের ১০টি সেরা হাসপাতালের মধ্যে ৬টি ব্যবহার করছে (৬টি হাসপাতাল হল- ১. মায়ো ক্লিনিক-রচেস্টার, ২. ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক- ইউএসএ, ৩. ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল- ইউএসএ ৪. চ্যারিট-ইউনিভার্সিটেটসমেডিজিন- জার্মানি ৫. দ্য জনস হপকিন্স হাসপাতল-ইউএসএ ৬. সেবা মেডিকেল সেন্টার-ইসরায়েল)।
মাদুরাইয়ের মীনাক্ষী মিশন হাসপাতাল হল ভারতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রথম এবং একমাত্র হাসপাতাল। এটি শিলিগুড়ির রোগীদের রোগ নির্ণয় এবং পরামর্শের জন্য মাদুরাইয়ের মীনাক্ষী মিশন হাসপাতালের ৪৫টি বিভিন্ন চিকিৎসা বিভাগের সেরা চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করার সুযোগ করে দেবে।
মীনাক্ষী মিশন হাসপাতাল ও রিসার্চ সেন্টার, মাদুরাই-এর চেয়ারম্যান ডাঃ এস গুরুশঙ্কর বলেন, “শিলিগুড়িতে এই ধরনের উন্নত টেলিকনসাল্টেশন ক্লিনিকের খুব প্রয়োজন ছিল। প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গ থেকে বহু রোগী আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসেন। এই ফেসিলিটিটি আমাদের এই রাজ্যের মানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসবে যাঁরা সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চ মানের চিকিৎসা পরিষেবা খুঁজছেন। টেলাডোক হল হল-পার্সন ভার্চুয়াল কেয়ারের ক্ষেত্রে গ্লোবাল লিডার। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত টেলিমেডিসিন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। আমরা ভারতের একমাত্র হাসপাতাল যেখানে সম্পূর্ণভাবে টেলাডোক-এর ওপর ভিত্তি করে একটি টেলিমেডিসিন কেন্দ্র স্থাপন করেছি। আমরা এখন সারা দেশে নির্বাচিত স্থানে আমাদের এক্সক্লুসিভ টেলিমেডিসিন কেন্দ্র স্থাপন করছি, যেখান থেকে রোগীরা আমাদের হাসপাতালের বিভিন্ন চিকিৎসা বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে। এইভাবে তারা অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে পারবে। এছাড়াও, মাদুরাইয়ের মত একটি টিয়ার-২ শহরের একটি টার্সারি হাসপাতালের পরিষেবা পাওয়ার খরচ একটি বড় মেট্রোতে তুলনামূলক ফেসিলিটি`র চেয়ে অনেক কম। আমাদের টেলাডোক-সজ্জিত টেলিকনসাল্টেশন সেন্টার থেকে পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার রোগী উপকৃত হবেন।”
ইন্টারনেট অব থিংস দ্বারা চালিত, টেলাডোক মীনাক্ষী মিশনের বিশেষজ্ঞদের বহির্বিভাগের রোগীদের পরামর্শ প্রদান করতে সক্ষম করে; সঠিক সময়ে রোগীদের অত্যাবশ্যক হেলথ প্যারামিটার পরীক্ষা করা এবং ক্লিনিকাল পরীক্ষা চালান হয়। বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সহজেই রোগীদের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য স্বাস্থ্যের রেকর্ড প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ করা হয়। এই টেকনোলজিটি চিকিৎসকদের আরও ভাল ক্লিনিকাল সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য রোগীর ডেটা প্রোসেস করতে পারে। টেলাডোক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সংযুক্ত ক্যামেরা এবং ডিসপ্লে মনিটর রোগী-চিকিৎসক ইন্টারেকশনকে খুব কার্যকর করে তোলে। একজন রোগীর রোগ নির্ণয় ও পরামর্শের জন্য ছয়জন বিশেষজ্ঞ একই সময়ে দূর থেকে একত্রিত হতে পারেন।
ডাঃ এস গুরুশঙ্কর বলেন, “আমরা গত ১৫ বছর ধরে টেলিমেডিসিন পরিষেবা দিয়ে আসছি, এখনও পর্যন্ত এক লক্ষেরও বেশি রোগী এর সাহায্যে উপকৃত হয়েছে৷ আমাদের টেলিমেডিসিন বিভাগ সম্পূর্ণরূপে টেলাডোক টেলিহেলথ প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা আমাদেরকে ভারত জুড়ে রোগীদের উন্নত ফলাফলের সঙ্গে আমাদের বিশেষ পরিষেবাগুলিকে প্রসারিত করতে ক্ষমতায়ন করে। বিশেষজ্ঞরা একজন রোগীর বিষয়ে ক্রস-কনসাল্ট করতে পারেন এবং এমনকি অন্যান্য দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন।”
উপরের বক্তব্যের সঙ্গে আরও যোগ করে ডাঃ গুরুশঙ্কর বলেন, “টেলাডোকের মাধ্যমে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরে এবং রোগ নির্ণয়ের ভিত্তিতে, রোগীরা সাশ্রয়ী মূল্যে বিশেষ চিকিৎসা এবং অস্ত্রোপচারের জন্য মাদুরাইয়ের মীনাক্ষী মিশন হাসপাতালে যেতে পারেন।”
মীনাক্ষী মিশন হাসপাতালের টেলাডোক টেলিমেডিসিন বিভাগ এখন এপিসোডিক, অ্যাকিউট কেয়ার থেকে ক্রনিক অবস্থা, ওয়েলনেস এবং প্রিভেনশনের চলতি সমস্ত ধরনের পর্যবেক্ষণ পর্যন্ত টেকনোলজি ভিত্তিতে করা হচ্ছে। হাসপাতালটি ভারতের প্রথম হেলথকেয়ার প্রতিষ্ঠান, যেখানে দুই বছর আগে সারা দেশে যখন কোভিড -১৯ অতিমারি ছড়িয়ে পড়েছিল তখন এখানে সেলফ -ড্রাইভিং টেলাডোক স্বাস্থ্য রোবট মোতায়েন করা হয়েছিল যার সাহায্যে চিকিৎসকরা রোগীদের ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পরামর্শ প্রদান করতে সক্ষম হয়েছিলেন।